রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:৩২

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
চ্যালেঞ্জিং পজিশনে মেয়র সাদিক, নগর উন্নয়নে আইকন হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন

চ্যালেঞ্জিং পজিশনে মেয়র সাদিক, নগর উন্নয়নে আইকন হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন

dynamic-sidebar

খন্দকার রাকিব :: ৪৬ বছর বয়সী বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ নানা কারণে রাজনীতিতে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একাধারে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ ও সর্বশ্রেষ্ঠ সিটি মেয়রের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান অনেকাটা স্বপ্নের ন্যায় বাস্তবায়ন। যুবলীগ নেতা থেকে অভিষিক্ত এই নেতা বরিশাল রাজনীতিতে উত্থান পর্বেই আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন। কিন্তু তার রাজনীতি চলার পথ শুরুতে অতটা মসৃণ ছিল না। মহানগরের রাজনীতি নিয়ে নেতৃত্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তার চলার পথ কণ্টকময় হয়ে ওঠে। নিজের দূরদর্শিতা ও প্রতিভার গুণে সাদিক আবদুল্লাহ নিজেকে নিয়ে যান বহু দূর।

একপর্যায়ে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান, সেখান থেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন লাভ সবই ছিল তার প্রাপ্য। বেশকিছু গুণাবলীতে কোন বিতর্ক তাকে পিছু টেনে ধরতে পারেনি। যার ফলশ্রুতিতে দায়িত্ব নেওয়ার গত এক বছরে যুব বয়সী সাদিক আবদুল্লাহ শ্রেষ্ঠ মেয়র নির্বাচিত হন একটি বেসরকারি সংস্থার জনমত জরিপে। নিজস্ব ব্যক্তিত্ব সক্রিয়তা-জনপ্রিয়তা সর্বোপরি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যতিক্রমী ভূমিকা রাখায় তার এই স্বীকৃতি অর্জন বলে ওই সংস্থাটির অভিমত।

কারণ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরেই পাল্টে যায় তার গতি প্রকৃতি। দলীয় রাজনীতির থেকেও অতিকাতর মনোনিবেশ করেন সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে। যার প্রথম পদক্ষেপ ছিল নগরভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কাজের স্বচ্ছতা পুনরুদ্ধারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান। অল্প দিনেই নগরভবনকে তিনি ঢেলে সাজাতে সক্ষম হন। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তিস্বরূপ দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে অনিয়মের ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরেন। যুক্ত করেন নগরভবনের পরিবহন ও যান্ত্রিক মেশানাদী আধুনিকিরণ করার।

যার ফলশ্রুতিতে প্রথমেই নগরভবন রূপ পায় আরও আধুনিকতার। একের পর এক নিত্য নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন মেয়র সাদিক। শুরু হয় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। সড়ক থেকে শুরু করে পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন বা অবকাঠামো পরিবর্তনসহ খাল সংস্কারের উদ্যোগ প্রসংশিত হয় সর্বমহলে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সর্বপ্রকার ঠিকাদারি কাজ থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হওয়াকে আরও একটি সাহসী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন নগরবাসী। সেই সাথে স্থানীয় দলীয় রাজনীতিতে বিভাজনের রেখা মুছে দিতে এই যুব রাজনীতিবিদের ভূমিকাও উল্লেখ করার মতো।

রাজনীতিতে নেতৃত্বের স্বচ্ছতার পাশাপাশি নগর উন্নয়ন পদক্ষেপে মেয়র হয়ে ওঠেন এক আইকন। যাকে মডেল বললেও অত্যুক্তি হবেনা।

কারও কারও অভিমত, মেয়র সাদিক বরিশাল নগর উন্নয়নে অগ্রসর হতে সহায়ক হয়েছেন নগর ভবনকে দলীয়মুক্ত রাখতে সক্ষম হওয়ায়। তার বড় প্রমাণ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দলীয় লোকদের দূরত্বে রাখা। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের প্রভাব না থাকায় কাজে এসেছে স্বচ্ছতা।

সর্বোপরি সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক দৈন্যতা দূরকরণে বেশ কয়েকটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বাস্তবায়নে যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে তাতে সর্বমহলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বিশেষ করে কর আদায়ে কৌশলী এক পদক্ষেপ হচ্ছে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের ট্যাক্স বৃদ্ধি এবং তা আদায়ে নিজের পৈত্রিক বসতবাড়ির বাৎসরিক কর ষোলগুণ বৃদ্ধি করে পিলে চমকে দেন। তার এই সিদ্ধান্তের বা উদ্যোগের মূলে রয়েছে অন্যান্যদের কর দিতে উৎসাহিত করা। তবে অতীত ইতিহাস বলে কর প্রদানে নগরবাসীকে উৎসাহিত করতে নিজের বাড়ির ট্যাক্স বৃদ্ধিতে এই প্রথম কোন মেয়র ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেন।

নগরভবন সূত্রে জানা গেছে, মেয়র সাদিক নগরীর বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন। কিন্তু তা প্রকাশ করেননি। প্রায় শতাধিক মসজিদ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করতে সরবরাহ করেছেন এসি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে নিজ কৌশলে ধর্মীয় উপাসনালয়ের জন্য এসি বরাদ্দ নিয়ে আসতে সক্ষম হন মেয়র সাদিক। একজন তরুণ মেয়র হিসেবে তার উন্নয়ন পরিকল্পনায় যে আধুনিকতার ছাপ ফুটে উঠেছে তা যেন সাবেক মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরনের উন্নয়ন ধারাবাহিকতাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে আরও বেশকিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। বেওয়ারিশ কুকুর নিধন নিষিদ্ধ হওয়ায় তা একটি স্থানে আটকে রাখতে নতুন একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে পথে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কুকুরের উৎপাত থেকে নগরবাসীকে মুক্তি, আবার সেই প্রকল্প থেকে আয়ের উৎস বের করার এক চমকীয় পরিকল্পনা শোনা যায়। একদিকে নগর উন্নয়ন অন্যদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে ওয়ার্ডভিত্তিক সংগঠনের কাঠামো সুদৃঢ় করতে এগিয়ে চলছেন তরুণ এই নেতা। সবকিছু মিলিয়ে বর্তমানে দলীয় নেতা ও নগরপিতা হিসেবে সাদিক আবদুল্লাহ একটি চ্যালেঞ্জিং পজিশন তৈরি করেছেন। সহসাই তিনি এই পজিশন উতরে যাবেন বলে তার কর্মকাণ্ড বলে দেয়।

আওয়ামী লীগের ৭০ বছর প্রতিষ্ঠার এই সময়কালে সাদিক এখন বরিশাল রাজনীতিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন বলে অভিমত পাওয়া যায়। এক সময়ের কিশোর সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল রাজনীতিতে নীরবে অবস্থান নিয়ে দলীয় নেতা শওকত হোসেন হিরনের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ এবং অনুসরণ করার ধরন দেখে অনুমান করা গিয়েছিল তিনি হতে চান ভবিষ্যতের নেতা। অবশ্য হয়েছেনও তাই। যে কারণে সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালের রাজনীতিতে ঘুরেফিরে আলোচনায় থাকছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া শিশু সাদিক এখন পরিণত রাজনীতিবিদ। আবার উন্নয়নের আইকন। সবই সম্ভব হয়েছে নিজস্ব স্বক্রিয়তা এবং সাংগঠনিক দূরদর্র্শিতায়।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net